মোঃ বিল্লাল হোসেন: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দীতা করার ঘোষণা দিয়েছেন বন্দর উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন। মঙ্গলবার (১৯ আগষ্ট) প্রতিবেদকের সাথে এক মুক্ত আলোচনায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
তিনি প্রতিবেদককে জানান,আমি বন্দরের সন্তান। মুছাপুর আমার পৈত্রিক নিবাস। আমার পূূর্ব পুরুষরা মানুষের সেবা করে গেছেন। আমার পিতা রফিক চেয়ারম্যান একজন দানবীর মানুষ ছিলেন। আমার বড় ভাই আনোয়ার চেয়ারম্যান একজন ধর্মভিরু পরোপকারী জনপ্রতিনিধি ছিল। পরিবার সুত্রেই মানুষের পাশে থেকে জনসারথি হওয়ার স্পৃহা তৈরী হয়েছে।
তিনি বলেন, বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ২০১১ সালে আমার বড় ভাই আনোয়ার হোসেন চেয়ারম্যান ছিল। আমার বড় ভাই সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর এই ইউনিয়নটি অভিভাবক শুন্য হয়ে যায়। তখন মুছাপুবাসীর অনুরোধে উপ-নির্বাচনে প্রথম স্বতন্ত্র প্রার্থী গরুরগাড়ি মার্কা প্রতিকে ৬৯২২ ভোট বেশি পেয়ে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে পরাজিত করে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১২হাজারের অধিক ভোট পেয়ে নির্বাচিত হই। ২০২১ সালে একই ভাবে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীকে পরাজিত করে ১০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে পূণরায় নির্বাচিত হই। ২০২৪ সালে জনগনের অনুরোধে বন্দর উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করি। দুইজন প্রভাবশালী হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারিয়ে ১৫ হাজারের বেশি ভোটে নির্বাচিত হই।
স্বৈরাচার সরকার আমলে এমপি সেলিম ওসমানের সাথে সখ্যতার বিষয়ে তিনি বলেন,মুলত জনপ্রতিনিধি থাকাকালে সব সময় জনগনের কল্যান সম্পর্কিত কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলাম। জনপ্রতিনিধি হলে বিভিন্ন সরকারী অনুষ্ঠানে তার যেতে হয়েছে। জনকল্যান মুলক কাজে যেতে হয়েছে। কেউ বলতে পারবে না মাফিয়া ওসমানদের পদলেহন করেছি। বন্দরে অনেক জনপ্রতিনিধি মাফিয়া ওসমানদের দোসর ছিল। কিন্তু আমি কখনোই তাদের অনুগত হইনি। বরং ওসমানদের দ্বাড়া নির্যাতিত হয়েছি। হুমকির। িকার হহয়েছি। এবং রাজনীতির বাইরে থেকে জনকল্যাণে কাজ করে আসছেন বলে উল্লেখ করেন।
অন্তবর্তী সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার গুঞ্জনের প্রশ্নে তিনি বলেন,আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। গনতান্ত্রিকভাবে আমার নির্বাচন করার অধিকার রয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মূখে স্বৈরাচারী সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করেছে। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক দলের হয়ে নয় বরং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগনের মনোনীত প্রার্থী হয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ সদর বন্দর আসন থেকে নির্বাচনটা করতে চাই। বৈষম্যহীন নারায়ণগঞ্জ গড়ার লক্ষে মানুষের মৌলিক অধিকার অটুট রাখতে একটা পরিবর্তন দরকার। নারায়ণগঞ্জের মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারে এমন একজন জনপ্রতিনিধি হতে চাই।
তিনি প্রতিবেদককে বলেন,প্রথমত আমি বিশ্বাস করি,নারায়ণগঞ্জ-৫ সদর বন্দর আসনে এমন নেতৃত্ব দরকার যিনি কোনো পক্ষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবেন না, যিনি নারায়ণগঞ্জবাসীর অধিকারের বিষয়ে অটল থাকবেন। পাশাপাশি তিনি বলেন,নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার গুণগত মানসম্পন্ন এবং রাজনৈতিক আধিপত্যমুক্ত শিক্ষালয় গঠনে সকলে মিলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া জরুরি।’কেননা ছাত্র সমাজ রক্ত দিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে স্বৈরাচার বিতাড়িত করেছে। আমরা সকলে মিলে বৈষম্যহীন নারায়ণগঞ্জ গড়তে চাই।
একটি রাজনৈতিক দল আপনার বিষোদগার করছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,আমি দীর্ঘদিন ধরে বন্দরবাসীর কল্যানে জনকল্যান মুলক কাজ করছি। নারায়ণগঞ্জ ও বন্দরের মানুষ আমাকে ভালবাসে। হয়ত আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষাম্বিত হয়ে তারা আমার বিরোদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি তাদের সম্মান করি। এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠেই জনগন তাদের জবাব দিবে। ব্যালটের মাধ্যমেই নিজের যোগ্যতা প্রমান করতে চাই। নারায়ণগঞ্জে বিগত সময়ে একটি মাফিয়া পরিবার নারায়ণগঞ্জকে উন্নয়ণে বাধাগ্রস্ত করেছে। যারা মনে করেন নারায়ণগঞ্জের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন,সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ,ব্যবসায়ীদের ব্যবসার পরিবেশ ও নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে চান তাদের সাথে আমি সব সময় একাত্নতা প্রকাশ করছি।