স্টাফ রিপোর্টার: জুলাই-২৪ গণহত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. নূর জাহান কে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।
রবিবার মধ্য রাতে নগরীর উত্তর চাষাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের দোসর নূর জাহানের মালিকানাধীন ফ্লাটে পুলিশ অভিযান চালালোর খবর পেয়ে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
সরকারি চাকুরীতে কোটাসংস্কারের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে লেজ গুটিয়ে স্বৈরাচার খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও অদৃশ্য কারণে নারায়ণগঞ্জের উত্তর চাষাড়ার রামবাবুর পুকুরপাড় এলাকায় বহাল তবিয়তে ছিলেন, স্বৈরাচারের দোসর সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. নূর জাহান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জুলাই-২৪ গণহত্যা মামলা ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নানা অপকর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাত ১২ টার দিকে নূর জাহান বেগমকে গ্রেফতার করতে যায় ফতুল্লা ও সদর মডেল থানা পুলিশ। এর কিছু পরেই তাদের বাড়ির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে পুলিশ ডুকতে বাঁধা সহ অন্যান্য ফ্লাট মালিকদের আসা যাওয়া বন্ধ করে দেন নূর জাহানের স্বজনরা। পরে ফতুল্লা মডেল থানা ও সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে তালা খুলে বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে শহরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. নূর জাহান সাবেক এমপি সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের আশীর্বাদপুষ্ট ছিলেন। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে তিনি নানা অপকর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো। তার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী মামলা সহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। আওয়ামী দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করছে। যেহেতু তারা দেশ থেকে প্রচুর টাকা পাচার করেছে, সেই টাকা তারা ব্যবহার করছে। এই টাকা ব্যবহার করে তারা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা কোনো অবস্থায়ই এটা করতে দেবো না। যে কোনোভাবেই হোক আমরা তাদের প্রতিহত করবো।
প্রায় প্রতিদিনই প্রশাসনের হাতে গ্রেফতার হচ্ছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর ও গণহত্যা মামলার আসামিরা। কিন্তু কোন সাহসে গ্রেফতার ও ভয়ভীতির উর্ধ্বে এসে এড. নূর জাহান এখনো রয়েছে বহাল তবিয়তে। অনেকে বলছে ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত এ সফলতা কিছু অতিলোভী রাজনৈতিক নেতার কারণে আজ ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। তারা প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
গণহত্যা মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে কারণ জানতে চাইলে, এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) তাসমিন আক্তার বলেন, আমরা গ্রেফতার করতেছি। বৈষম্য বিরোধী মামলার আসামীতো অনেক যারা পলাতক রয়েছে। কিন্তু আমাদের তো এরেস্ট চলছে। গতকাল আমাদের ফোর্স সারারাত তেরো তলার প্রত্যেকটি ফ্লাটে ফ্লাটে চেক করেছে কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। হয়তো সে আগেই চলে গিয়েছে। রাতে এবং ভোরেও ঐ মহিলাকে খোঁজা হয়েছে। সামনে আমাদের নতুন এসপি সাহেব যে মোতাবেক ডিরেকশন দেবে আমরা সেই মোতাবেক কাজ করবো।